বাংলা কবিতা, মৃত্যুর ডাক আসুক কবিতা, কবি আতিক আনন্দ কর - কবিতা অঞ্চল
4/5 - (1 vote)

যোগ্যতা আর অযোগ্যতার মিছিলে,
আমি বরাবরি অযোগ্যদের দলে!
কোন প্রভাতে স্লোগান দিতে গিয়ে লাঠি চার্জ হয়েছিলো পিঠে,
তা ইতিহাসের পাতায় লিখেনি কোন হেরোডটাস।
ক্লান্ত ভগ্ন পায় হেঁটে বেড়িয়েছি শহীদ মিনার থেকে বন্দরের চৌ-রাস্তা!
জেনে অবাক হবেন,
যে তর্জনী গর্জনরত অবস্থায় একদা তাক হয়েছিলো ধর্ষণকারী রাষ্ট্র যন্ত্রের দিকে,
আজ সেই তর্জনী চুপিচুপি কবর খোঁজে,
চিতা সাজিয়ে বসে থাকে মৃত্যু অপেক্ষায়!

ভাবতে পারেন মারা গেছি, কাপুরুষ হয়ে গেছি,
হেরে গেছি জীবন যুদ্ধে।
যে কোন সময় দিয়ে দিতে পারি গলায় দড়ি
কেটে ফেলতে পারি হাতের শিরা,
গিলে নিতে পারি গোটা দুইশ ঘুমের বড়ি!
এসব ভেবে লিখে ফেলুন আমার এপিটাফ,
লিখে ফেলুন এখানে শায়িত এক পারভারট,
যে ভালবেসেছিল নয়ন তারা, যে ভালোবেসেছিল কবিতা,
প্রাক্তনরা আসুন, এসে মিটিয়ে যান ক্ষোভ থুথু নিক্ষেপ করে।
কেন ছেলেটি কবিতা বেসেছিলো ভালো?
ভাসেনি কেন বাস্তবের জলে?
তা নিয়ে মৃত্যুর পর গালি দিয়ে লিখতে পারেন কলামের পর কলাম,
জানেন নিশ্চয়ই, মৃতরা নিজেকে কখনো করতে পারেনা দাবি শুদ্ধ বলে!

আমার জন্ম ক্ষুধা আর ব্যর্থতা সাথে নিয়ে,
পিতা কানে আজান না দিয়ে,
যদি বলতেন তোকে জন্মানো হয়েছে পাপ,
তাহলে ক্ষতি হতো না পৃথিবীর খুব একটা!
হাজার শিশু রোজ মারা যায় পিতার নাম না পাবার যন্ত্রণায়!
আমার কাঁধেও বসে আছে এমন এক শিশুর লাশ!
যাকে আমি রোজ করছি বড় সকাল থেকে সন্ধ্যা।
সে বুকের বা-পাশে হেটে বেড়ায় ইনকা সভ্যতার মতো!

বেঁচে থাকতে হয় উন্মাদনায়,
হাতের তালু উল্টে গেলে জীবন শেষ।
পোকা মাকড়ের মতো বেঁচে থাকার চাইতে দাম্ভিক হয়ে মুক্তি ভালো!
এই বিশ্বাস নিঃশ্বাসে নিয়ে-শব্দের মিছিল দিতে দিতে,
কখন সংসার নামক জেলের সদর দরজা দিয়ে ঢুকে শিকল পড়েছি পায়,
তা ক্যালেন্ডারের ভেজা অংশ দেখলে বুঝে যাবে যে কেউ।
মধ্যযুগের দাসের মতো হাতে পায়ে বেড়ি দিয়ে নিজেকে তুলছি নিলামে!

বেঁচে থাকতে টাকা লাগে,‎ক্ষুধা মিটে না কবিতায়।
রেসের ঘোড়া হয়ে ছুটতে হয় জন্মের পর।
কাঁধে লাশ চাপিয়ে নেমে যেতে হয় নিজের কবর খুঁড়ার কাজে!

বেঁচে থাকতে যত টাকাই লাগুক,
মরে যেতে লাগে না কিছুই।
বেঁচে থাকাটা আজকাল কষ্ট ভীষণ,
এবার মৃত্যুর ডাক আসুক!

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments