বাংলা কবিতা, কমরেড লাল সালাম কবিতা, কবি আতিক আনন্দ কর - কবিতা অঞ্চল
3/5 - (1 vote)

রুদ্রের সাথে বেশ্যালয়ে বসে,
নিকোটিনে গাঁজা মাখাতে মাখাতে,
কখন তাকে ভালোবেসে ফেললাম-তা ইশ্বর জানে।
অতিরিক্ত রুদ্র প্রেম দেখে রবীন্দ্রনাথ তার-
কঠিন শব্দে তৈরী ছড়ি দিয়ে যখন আমার পিঠের ছাল তুলতে ব্যস্ত,
তখন সহসা নজরুল ডেকে বসলেন জেলের ভেতর অনশন!
তাকে খাবার খাওয়ানোর জন্য,
ব্রিটিশদের অনুরোধে রবীন্দ্রনাথ ছড়ি রেখে পত্র লিখাতে মন দিলেন।

হুট করে কোথা থেকে কার্ল মার্কস প্রবেশ
করে চিৎকার দিলেন-
“লং লিভ সোসিয়ালিজম,
ডাউন ডাউন ক্যাপিটালিজম!”
রবীন্দ্রনাথ বড্ড বিতৃষ্ণা নিয়ে তাকালেন মার্কসের দিকে!
যেনো এখনি কাব্যিক কন্ঠে বলে উঠবেন-
“এ কোন হুলো বিড়ালের আগম হলো হেতা,
চিৎকার দিয়ে ধরাইলো মাথা ব্যথা!”

তবে কমরেড লেনিন পাশে দাঁড়িয়ে,
স্বভাবসুলভ মুচকি হেসে, এক হাত আমার কাঁধে রেখে
অন্য হাতে কোমরের খাঁপ থেকে পিস্তল বের করে হাতে ধরিয়ে ভরাট গলায় বললেন-
“খোকা তুমি এখনো বিপ্লবে যাওনি? এর্নেস্তো যে তোমার পথ চেয়ে বসে আছে!
তুমি গেলেই সে তার ডাইরিটা তোমার হাতে ধরিয়ে দিবে! যাও এখুনি বেরিয়ে পড়ও!”

ততোক্ষণে রুমে চিৎকার শুরু হয়ে গেছে,
ব্রিটিশ বাহিনী রবীন্দ্রনাথকে কেন
নোবেল দিলো তা নিয়ে মার্কস গন্ডগোল পাকিয়ে বসলেন।
রবীন্দ্রনাথও ছাড়বার পাত্র নন,
তিনি একের পর এক কবিতায় জর্জরিত করতে থাকলেন মার্কসকে।
শুধু রুদ্রই এক কোণায় বসে সিগারেট ফুঁকছিলেন আপন মনে।
আহ… এ যে পরমানন্দ!

আমার বড্ড ইচ্ছা হচ্ছিলো তার সাথে সিগারেট ফুঁকার,
কমরেড লেনিনের ভয়ে এগুলাম না।
ঘর থেকে রাস্তায় নামার সাথে সাথে,
এক উচ্ছ্বল মেয়ে পথ আগলে বললো-
আমি নির্মল সেনকে দেখেছি কি না?
ব্রিটিশের গুলি খেয়ে নাকি বেচারা কাতরাচ্ছে মরণ যন্ত্রনায়।
কথাটি বলেই চোখের পলকে মেয়েটি,
পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করে আমার সামনে!

আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তাকাতেই দেখি,
দাঁতে মেসওয়াক লাগিয়ে কিছু অদ্ভুত জন্তু দৌড়ে আসছে!
তাদের কন্ঠে আইয়ামে জাহেলিয়াতের স্লোগান!
ব্লগার-ব্লগার, নাস্তিক-নাস্তিক বলে-
তারা দৌড়ে আসছিলো পাগলা কুকুরের মতো।

মৃত্যু নিশ্চিন্ত ভেবে দাঁতে দাঁত চেপে যেই চোখ বন্ধ করেছি,
তখনি মহামতি বুদ্ধ আর কৃষ্ণ
পাঞ্জাবী টুপি পরে এগিয়ে এসে কোঁপটা
তাদের ঘাড়ে নিলেন।

তাদের খন্ডিত মস্তক থেকে একটি শব্দ
বেরলো বারবার-“পৃথিবীর সকল প্রাণী সুখি হোক”!
ভয়ে ভয়ে চোখ মেলতেই দেখলাম-
অদ্ভুত প্রাণীগুলি পালাচ্ছে মোটরসাইকেলের শব্দ শুনে!
পায়ের কাছে মোটরসাইকেল থামিয়ে
এর্নেস্তা চিৎকার দিলেন-“বিপ্লব…দীর্ঘজীবি হোক!”
অমনি বুদ্ধ আর কৃষ্ণের মাথা জোড়া লেগে গেলো,
তারা দেহের ধূলো ঝেরে খেজুর চিবুতে থাকা
টিকটিকিকে সজোরে আছাড় মেরে মাটিতে,
তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন- কমরেড লাল সালাম

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments