Review This Poem

উড়ছে হাওয়ায় কোটি কোটি
বন্ধকে যায় দীনের বাটি
অভাবের তাড়নায়।

কুসীদজীবী শুধায় দীনে
এ বাটি কোথায় এনেছ কিনে?
কাঁসার বাটি কত খাঁটি?
কঠিন প্রশ্ন, আঘাত হানে দীনের চেতনায়।

তর্জনীর এক সজোর টোকায় নিঃসরে ধ্বনি
অবাক দৃষ্টে তাকিয়ে ঋণী।
ধ্বনি শুনে কুসীদজীবী পাত্রের গুণ
করেন নির্ণয়।

কুসীদজীবী কহেন ভেবে
আনা সুদ পড়বে টাকায়
প্রতি মাসে, ষোল মাসে ষোল আনা,
সুদ, আসলের সমান হবে।

যদি ধার শোধিতে হও অপারগ
বাসন তোমার বাজেয়াপ্ত হবে।
না লাগিবে সুদ, না লাগিবে আসল
বাটির স্বত্ব নাহি রবে।

মাথা নীচু ক’রে হীন মনে দীন
গ্রহন করিল বন্ধকের ঋণ।
করিল প্রস্থান নীরবে ব্যথায়
পথের ধুলায় ফেলিয়া চরণ।।

মনে মনে ভাবিল দীন
বাটি আমার ছোট ঘর ছাড়ি
বড় ঘরে যাবে।
আসল-সমান সুদ পরিশোধ
মোর পক্ষে অসম্ভব হবে।।

এইভাবে দিন দিন আসিবে কত না দীন
কেউ ঘটি কেউ বাটি ল’য়ে।
অর্ধেক দামে দিতে হবে শেষের সম্পদ
নিজের বলি রহিবে না আর কিছু
এ ধরণী পর।
তিলে তিলে সাজিবে ঐ কুসীদজীবীর ঘর।।

দীনের রাক্ষসী ক্ষুধা, নিবারণে তায়
গ্রাসিছে কত তৈজস হিসাব নাহিকো হায়।

দীনের বাড়িতে কাঁসার বাটি
মাটির ঘরে খড়ের আঁটি
সহিল না বিধাতার।

দারিদ্রের নাগপাশে আবদ্ধ করি দীনে
বিধাতা ছলিছেন যেন শেষ সম্বল হীনে!
যদিও ফুটিবে দিনের আলো
রাত্রির অবসানে।
কাঁসার বাটির ঝঙ্কার ধ্বনি উঠিবে রণনি
দারিদ্রের অনুরণনে।।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments