Review This Poem

এইভাবে ভ্রমণে যাওয়া ঠিক হয় নি, আমি ভুল করেছিলাম!
করাতকলের কাছে কাঠচেরাইয়ের শব্দে জেগেছিল সম্ভোগের পিপাসা!
ইস্টিশানে গাড়ির বদলে ফরেস্ট সাহেবের বনবালাকে দেখে
বাড়িয়েছিলাম বুকের বনভূমি!

আমি কাঠ কাটতে গিয়ে কেটে ফেলেছিলাম আমার জন্মের আঙুল!
ঝর্নার জলের কাছে গিয়ে মনে পড়েছিল শহরে পানির কষ্ট!
স্রোতস্বিনী শব্দটি এত চঞ্চল কেন গবেষণায় মেতেছিলাম সারাদিন
ক্ষুধাতৃষ্ণা ভুলে!
আমি উপজাতি কুমারীর করুণ নশ্বর নম্র স্তনের অপার আঘ্রাণে
প্রাচীন অনাধুনিক হয়ে গিয়েছিলাম শিশুর মতো!
আমি ভুলে গিয়েছিলাম পৃথিবীতে তিন চতুর্থাংশ লোক এখনো ক্ষুধার্ত!

আমি ভুলে গিয়েছিলাম রাজনীতি একটি কালো হরিণের নাম!
আমি ভুলে গিয়েছিলাম সব কুমারীর কৌমার্য থাকে না, যেমন
সব করাতকলের কাছে কাঠমিস্ত্রির বাড়ি, সব বনভূমিতে
বিদ্যুৎবেগবতী বাঘিনী!
যেমন সব মানুষের ভিতরে এক টুকরো নীলরঙা অসীম মানুষ!

আমি ভুলে গিয়েছিলাম বজ্রপাতের দিনে বৃক্ষদের আরো বেশি
বৃক্ষস্বভাব!

যেমন আমি ভুলে গিয়েছিলাম সব যুদ্ধই আসলে অন্তহীন
জীবনের বীজকম্প্র, যৌবনের প্রতীক!

এইভাবে ভ্রমণে যাওয়া ঠিক হয় নি আমার হৃদয়ে হয়তো কিছু
ভুলভ্রান্তি ছিল,
আমি পুষ্পের বদলে হাতে তুলে নিয়েছিলাম পাথর!
আমি ঢুকে পড়েছিলাম একটি আলোর ভিতরে, সারাদিন আর
ফিরি নি!

অন্ধকারে আমি আলোর বদলে খুঁজেছিলাম আকাশের উদাসীনতা!
মধু-র বদলে আমি মানুষের জন্য কিনতে চেয়েছিলাম মৌমাছির
সংগঠনক্ষমতা!
পথের কাছে পাখিকে দেখে মনে পড়েছিল আমার হারানো কৈশোর!
পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল আমি আসলেই পথ হাঁটছি,
পথিক!

তবু ভ্রমণে আবার আমি ফিরে যাব, আমি ঠিকই পথ চিনে নেব!
অনন্তের পথিকের মতো ফের টের পাব
কে আসলে সত্যিই কুমারী, কে হরিণ কে রমণী কে-বা স্ত্রীলোক!
আর ঐ যে করাতকল, ওরা কেন সারারাত কাঠচেরাই করে!

আর ঐ যে অমৃত ঝর্না, ওকে কারা বুকে এনে এতটা স্বর্গীয় শব্দে
স্রোতস্বিনী ডাকে!

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments